Posts

দালীলিক প্রামাণপঞ্জির আয়নায় কথিত আহলে হাদীস ভ্রান্ত মতবাদ

Image
১৬ই জানুয়ারী ২০১৩ খ্রিস্টাব্দে বসুন্ধরা ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারে দেশবরেণ্য উলামায়ে কেরামের উপস্থিতিতে শাইখুল হাদীস মুফতী মনসূরুল হক দা.বা. এক ঐতিহাসিক বয়ান পেশ করেন। বিষয়বস্তুর গুরুত্ব উপলব্ধি করে পরিমার্জিত ও পরিবর্ধিত আকারে বয়ানটি আপনাদের খেদমতে পেশ করা হল। ইংরেজরা ভারতবর্ষ দখল করার পর যখন বুঝতে পারল জেল-যুলুম, অত্যাচার-নির্যাতন এবং খুন-গুম করে এদেশের মুসলমানদেরকে দমন করা সম্ভব নয়। সত্যিকার মুসলিম জনতা চির স্বাধীন, অন্যায় ও অসত্যের কাছে তারা কখনো মাথা নত করে না, তখন তারা এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করল যে, বাগে আনতে হলে মুসলমানদেরকে বিভিন্ন দলে উপদলে বিভক্ত করে দিতে হবে। ইংরেজ সরকার তাদের এ স্কিম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তাদের অনুগত চারজন লোকের মাধ্যমে মুসলিম জনসাধারণের মধ্যে চার ধরনের ফিৎনা ছড়িয়ে দিল। এগুলোর অন্যতম ছিল, আহলে হাদীস ফিৎনা। মৌলভী আব্দুল হক বেনারসীর (মৃত্যু:১২৭৫ হি.) উদ্ভাবিত মৃতপ্রায় এই মতবাদকে পুনঃজীবিত করার লক্ষ্যে ইংরেজ সরকার মুহাম্মাদ হুসাইন আহমদ বাটালবীকে বেছে নেয়। বাটালবী সাহেব সরলমনা মুসলমানদের মধ্যে সর্বক্ষেত্রে হাদীস মানার চটকদার বুলি আওড়ে এক ভয়াবহ বিভ্রান্তি ছড়িয়ে দ

নবীজী ﷺ এর জন্ম ও মৃত্যুর বিশুদ্ধ তারিখ কি?

Image
আমরা শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উম্মত। তাই আমাদেরকে তাঁর জন্ম ও মৃত্যুর সঠিক তারিখ জানা উচিত। নির্ভরযোগ্য ইতিহাসবেত্তাদের উদ্ধৃতির আলোকে আমরা নবীজী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জন্ম ও মৃত্যুর সঠিক তারিখ নির্ণয়ের চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ। নবীজী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জন্ম তারিখঃ নবীজী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জন্ম তারিখ নিয়ে ঐতিহাসিকদের নিকট মতানৈক্য রয়েছে। তবে নবীজী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জন্ম রবিউল আউয়াল মাসের কোনো এক সোমবার হয়েছে, এ ক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্য সকল ইতিহাসবিদ উলামায়ে কেরাম একমত। (আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া ২/২৮২) জন্ম তারিখ সম্পর্কে বিভিন্ন ধরণের বর্ণনা পাওয়া যায়। নিম্নে বর্ণনাগুলো উল্লেখ করা হলোঃ ১.রবিউল আউয়াল এর দুই তারিখ। ২.রবিউল আউয়াল এর আট তারিখ। ৩.রবিউল আউয়াল এর দশ তারিখ। ৪.রবিউল আউয়াল এর বার তারিখ। ৫.রবিউল আউয়াল এর সতের তারিখ। ৬.রবিউল আউয়াল এর আট দিন বাকী থাকতে। ৭.রমযান মাসের বার তারিখ। (আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া ২/২৮২) এসব বর্ণনার মধ্য থেকে হাফেজ ইবনে কাছির রহ. ‘আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া’

কথিত আহলে হাদীসদের আহলে তাক্বলীদ হওয়ার প্রমাণ পর্ব-৪

Image
রেফারেন্স সহ নীচে তুলে ধরা হলো । ✡ আল্লামা ইবনে তাইমিয়া রহঃ এর তাকলীদ গায়রে মুকাল্লিদ তথা কথিত আহলে হাদীস জামাতের নামকরা আলেম মাওলানা এনায়েতুল্লাহ আসরী সাহেব লিখেনঃ “গযনবী বুযুর্গরা বিশেষ করে এবং অন্যান্য আহলে হাদীসরা আমভাবে ইমাম ইবনে তাইমিয়া রহঃ এর আমালান তাকলীদ করে থাকে। {আলইতরুল বালীগ-১৫৯, রাসায়েলে আহলে হাদীস, ২য় খন্ড} ✡ ইবনে হাজমের তাকলীদ মাওলানা ওয়াহিদুজ্জামান গায়রে মুকাল্লিদ সাহেবরা শুধু কুরআন ও হাদীস মানার দাওয়াত দিয়ে তাকলীদকে হারাম ও শিরক বললেও নির্লজ্জভাবে কুরআন হাদীসের বিপরীত ইবনে হাজম রহঃ এর তাকলীদ করেছেন। কুরআনে কারীমে স্পষ্টভাষায় لَهْوَ الْحَدِيثِতথা অবান্তর বিষয়কে হারাম সাব্যস্ত করেছে। {সূরা লুকমান-৬} আর এটা সুনিশ্চিত যে, গান-বাজনা অযথা বিষয়ের মাঝে শামিল। সেই সাথে বুখারীর ২য় খন্ডের ৮৩৭ পৃষ্ঠায় এসেছে যে, রাসূল সাঃ বলেছেনঃ আমার উম্মতের মাঝে কিছু লোক এমন হবে, যারা গান-বাদ্যকে হালাল মনে করবে। কুরআন ও হাদীসের এসব বর্ণনা সত্ত্বেও গায়রে মুকাল্লিদ ওয়াহিদুজ্জামানসাহেব ইবনে হাজম রহঃ এর তাকলীদ করে ঘোষণা দিলেন যে, গান-বাজনা জায়েজ হওয়ার মতটিই অধিক

মাজহাব মানার প্রয়োজন কি? মাজহাব মানার দলিল কি?

Image
মাজহাব শব্দের অর্থ – চলার পথ ইসলামি পরিভাষায় পবিত্র আল কোরআন উল কারিম – সুন্নাহ শরিফ উনার প্রদর্শিত,রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, সিদ্দিকীন (রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম), শোহাদায়ে কেরাম (রহমতুল্লাহি আলাইহিমগন) ও সতকর্মশীল ব্যক্তিবর্গের মনোনীত পথের নামই হল মাজহাব। ভিন্ন অর্থে এটাই সিরাতে মুস্তাকিম ও সরল পথ । সুতরাং মাজহাব কোন নতুন ধর্ম, মতবাদ বা কোরআন সুন্নাহ বহির্ভূত ব্যক্তি বিশেষের নিজস্ব মতের নাম নয়, বরং মাজহাব হল পবিত্র কোরআন শরিফ, সুন্নাহ(পবিত্র হাদিস শরিফ), ইজমা ও কেয়াসের ভিত্তিতে বিভিন্ন ধর্মীয় সমস্যার প্রদত্ত সমাধান যা এ বিষয়ে বিজ্ঞ ব্যক্তিগণ প্রদান করেছেন। মাজহাব হল,কোরআন-সুন্নাহ উনাদের মতে অস্পষ্ট আয়াত শরিফ ও হাদীস শরিফ উনাদের ব্যাখ্যা মাত্র। সুতরাং কোন ইমাম ই রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার কথার বাহিরে এক কদম ও দেননি । সুতরাং যেহেতু বর্তমানের চার মাজহাবই ইসলামের মুল ৪ টি ভিত্তি তথা পবিত্র কোরআন শরিফ, সুন্নাহ(পবিত্র হাদিস শরিফ), ইজমা, ও কিয়াস শরিফ উনাদেরর আলোকে প্রণীত। আর এই ৪ টি মাযহাবের ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার

কথিত আহলে হাদীসদের আহলে তাক্বলীদ হওয়ার প্রমাণ পর্ব-৩

Image
 রেফারেন্সসহ নীচে তুলে ধরা হলো। মুহাদ্দিসীনদের তাকলীদ গায়রে মুকাল্লিদদের প্রথম সারির আলেম মাওলানা মুহাম্মদ হুসাইন বাটালবী সাহেব লিখেছেনঃ “গায়রে মুজতাহিদীন মুতলাকের জন্য মুজতাহিদীনদের তাকলীদ থেকে বের হয়ে আসা এবং তাদের অস্বীকার করার কোন জো নেই। তাদের কোথাও না কোথাও মুজতাহিদীন এবং মুহাদ্দিসীনদের আবশ্যকীয়ভাবে তাকলীদ করতে হয়। কিছু শাখাগত মাসআলার বিষয়ে হোক বা উসূল বা কায়দা-কানুনের ক্ষেত্রে হোক। চাই তা হাদীসের সহীহ বা জঈফ বলার ক্ষেত্রে হোক। {ইশাআতুস সুন্নাহ-১১/৩১২} বাটালাবী সাহেবের বক্তব্য একথা সুষ্পষ্ট প্রমাণিত করছে যে, যে ব্যক্তি মুজতাহিদে মুতলাক নয়, তার কোন না কোন স্থানে তাকলীদ করতেই হয়। চাই তা মাসআলা মাসায়েলের ক্ষেত্রে হোক, বা হাদীস সহীহ-জঈফ বলার ক্ষেত্রেই হোক না কেন। সুতরাং গায়রে মুকাল্লিদ তথা কথিত আহলে হাদীসরা যে হাদীসকে সহীহ বা জঈফ বলছেন এটাতো মুহাদ্দিসীনদের মতের উপর তাকলীদ করেই। হ্যাঁ, যেহেতু তাদের কাছে তাকলীদ শব্দের মাঝে চুলকানি রয়েছে, তাই তারা তাকলীদ শব্দ ব্যবহার না করে, এখানে তারা ইত্তেবাহ শব্দ ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু কাজ কিন্তু একই। তাকলীদের মাঝে

কেমন ছিলেন ফুরফুরা শরীফের পীর কাউয়ুম জামান আবু নসর আব্দুল হাই সিদ্দিকী (রহঃ)

Image
কেমন ছিলেন ফুরফুরা শরীফের গদ্দিনশীন পীর কাউয়ুমে জামান হযরত মাওঃ আবু নসর মুহাম্মদ আব্দুল হাই সিদ্দিকী (রহঃ) [ওয়াফাতঃ১৯৭৭]                                          একটি মনোরম দিনের সুন্দর সকাল। অপূর্ব সাজে সজ্জিত পৃথিবী। চারিদিকে রক্তিম আলো শুশোভিত পত্র-পল্লবে প্রাণের সঞ্চার করেছে। ধরার বুকে স্রষ্টা যেন শান্তির পরশ বুলিয়ে দিয়েছেন। এরই মাঝে খাদেম এসে সবিনয়ে আরজ করলো হুজুর কি নাস্তা করবেন? একটু চিন্তা করে হুজুর বললেন বাবা, নাস্তা যে করব পয়সা কোথায় ? কথা বলতে বলতে পকেটে হাত রাখলেন। পকেট থেকে দু-পয়সা বের করে দিয়ে বললেন, এক পয়সার চিড়া ও এক পয়সার চিনি নিয়ে এসো। হুকুম পেয়ে খাদেম দোকান খেকে চিড়া ও চিনি নিয়ে এলো। যতটুকু আনা হলো হুজুর তা থেকে কিছুটা খেলেন। বাকীটা রেখে দিতে বললেন। এমন সময় দোঁক মাদ্রাসার পরিচালক হাজি ফয়জুর রহমান সাহেব এসে হাজির হলেন। হুজুর বললেন বাবা নাশতা করেছেন কি? ওখানে চিড়া-চিনি রাখা আছে, নাশতা করে নিন। হাজি সাহেব হুকুম পালন করে নাশতা করলেন। তারপর হুজুরের খেদমতে হাজির হয়ে আদবের সাথে বললেন হুজুর, মাদ্রাসার মোদারেস সাহেবদের বেতন বাকী। এজন্য বার শত টাকা প্রয়োজন। কথা

মুসলমানদের বিয়েতে যে আমলগুলো আজ অবহেলিত

Image
ইসলামে বিবাহ একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এই ইবাদত পালন করার যেমন ইসলামি বিধান রয়েছে। ঠিক তেমনি এই গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতে কিছু মাসনুন আমলও রয়েছে। যেগুলো আমাদের সমাজে খুবই অবহেলিত। সেই অবহেলিত আমলের মধ্যে সর্বপ্রথম রয়েছে বিয়ের খুতবা। বিয়ের খুতবা পাঠ করা সুন্নাত, আর নিরবতার সাথে শ্রবণ করা ওয়াজিব। মুহাম্মদ ইবনে সুলায়মান আল আনবারী বলেন, আবদুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল (সা.) আমাদেরকে বিবাহ ইত্যাদি অনুষ্ঠানের জন্য খুতবা শিক্ষা দিয়েছেন। (সুনানে আবু দাউদ হাদিস নং ২১১৫) বিয়েতে এলানও একটি অন্যতম সুন্নাত আমল। কিন্তু সেটিও আমাদের সমাজে অবহেলিত। বিবাহের সুন্নাত হলো এলান বা প্রচার করে বিয়ের আকদ সম্পন্ন করা। বিনা কারণে গোপনে বিয়ে করা সুন্নতের খেলাফ। রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, তোমরা বিয়েকে প্রচার কর। (তিরমিজি:১ : ২০৭, ফাতওয়া রহীমিয়্যাহ ৮ : ১৪৭; আল বাহরুর রায়েক, কিতাবুন নিকাহ) বিয়ে মসজিদে সম্পন্ন হওয়াও একটি অন্যতম সুন্নাত। মহানবী (সা.) ইরশাদ করেন, বিয়ে মসজিদে সম্পাদন কর। (তিরমিজি ১ : ১৪৭) কিন্তু বড় পরিতাপের ব্যাপার হলো মুসলমানদের মুসলমানিত্ব ও দ্বীনদারীর চরম অধঃপতনের এ যুগ