মুসলমানদের বিয়েতে যে আমলগুলো আজ অবহেলিত





ইসলামে বিবাহ একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এই ইবাদত পালন করার যেমন ইসলামি বিধান রয়েছে। ঠিক তেমনি এই গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতে কিছু মাসনুন আমলও রয়েছে। যেগুলো আমাদের সমাজে খুবই অবহেলিত। সেই অবহেলিত আমলের মধ্যে সর্বপ্রথম রয়েছে বিয়ের খুতবা। বিয়ের খুতবা পাঠ করা সুন্নাত, আর নিরবতার সাথে শ্রবণ করা ওয়াজিব। মুহাম্মদ ইবনে সুলায়মান আল আনবারী বলেন, আবদুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল (সা.) আমাদেরকে বিবাহ ইত্যাদি অনুষ্ঠানের জন্য খুতবা শিক্ষা দিয়েছেন। (সুনানে আবু দাউদ হাদিস নং ২১১৫)
বিয়েতে এলানও একটি অন্যতম সুন্নাত আমল। কিন্তু সেটিও আমাদের সমাজে অবহেলিত। বিবাহের সুন্নাত হলো এলান বা প্রচার করে বিয়ের আকদ সম্পন্ন করা। বিনা কারণে গোপনে বিয়ে করা সুন্নতের খেলাফ। রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, তোমরা বিয়েকে প্রচার কর। (তিরমিজি:১ : ২০৭, ফাতওয়া রহীমিয়্যাহ ৮ : ১৪৭;
আল বাহরুর রায়েক, কিতাবুন নিকাহ)
বিয়ে মসজিদে সম্পন্ন হওয়াও একটি অন্যতম সুন্নাত। মহানবী (সা.) ইরশাদ করেন, বিয়ে মসজিদে সম্পাদন কর। (তিরমিজি ১ : ১৪৭) কিন্তু বড় পরিতাপের ব্যাপার হলো মুসলমানদের মুসলমানিত্ব ও দ্বীনদারীর চরম অধঃপতনের এ যুগে মহান এই সুন্নাতটি চরমভাবে অবহেলিত। বিয়েতে এই সুন্নাত পালন তো অনেক পরের কথা অনেক মুসলমান এটা জানেও না যে, মসজিদে বিয়ে পড়ানো সুন্নাত।
বিয়ে শাওয়াল মাসে ও জুমার দিনে সম্পন্ন করা উত্তম ও মুস্তাহাব। তাই এ ব্যাপারে সকলের খেয়াল করা উচিত। উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাকে শাওয়াল মাসেই বিয়ে করেছেন এবং শাওয়াল মাসেই বিবাহ-রজনী উদযাপন করেছেন। অথচ তাঁর অনুগ্রহ লাভে আমার চেয়ে অধিক সৌভাগ্যবতী স্ত্রী আর কে আছে? (সহিহ মুসলিম : ১৪২৩) তবে অন্য যে কোন মাস বা দিন কিংবা সময়েও বিয়ে করা জায়েজ আছে।
মুসলমানের সকল কিছুতেই এখন উল্টো স্রোত বইছে। মহানবি (সা.)-এর সুন্নত হলো বিয়ের পর উপস্থিত লোকেরা কিংবা এ বিয়ের খবর যারা জানবে তারা নব-দম্পতির জন্য নিম্নের দোয়াটি পড়া। দেয়াটি হলোম ‘বারাকাল্লাহু ওয়া বারাকা আলাইকা ওয়া জামা’আ বাইনাকুমা ফি খাইরিন।’ আল্লাহ বরকত দিন। বরকত অবতীর্ণ করুন তোমার ওপর এবং তোমাদের উভয়কে একত্র করুন কল্যাণ ও মঙ্গলের উপর (সহিহ তিরমিজি ১ : ২০৭, আবু দাউদ ১ : ২৯০) এখানেও বইছে উল্টো স্রোত। উক্ত হাদিসের ভাষ্যমতে যে বিয়ের খবর জানবে সে নব-দম্পতির জন্য দোয়া করবে। এই গুরুগম্ভীর ও বরকতপূর্ণ দোয়া তো কেউ পড়েই না।
উল্টো আকদ সম্পন্ন হওয়ার পর বর দাঁড়িয়ে সকলকে উদ্দেশ্য করে সালাম দেয়। অনেকেই আবার মুসাফাহাও করে থাকে যা ইসলাম পরিপন্থী। (ফতুয়ায়ে মাহমুদিয়া)

Comments

Popular posts from this blog

হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু'র প্রকৃত হত্যাকারী কে....?

ইসলামী গজল গাওয়া বা শোনা কি জায়েজ?

নামধারী আহলে হাদিস বিদাতী ফিরকার ইসলাম বিরোধী ৫০টি ভ্রান্ত মতবাদ