কথিত আহলে হাদীসদের আহলে তাক্বলীদ হওয়ার প্রমাণ পর্ব-২


 প্রমাণ রেফারেন্সসহ নীচে তুলে ধরা হলো।


আসুন আমরা গায়রে মুকাল্লিদ আলেমদের মনগড়া তাকলীদের কিছু নমুনা দেখিঃ

কুরবানী ওয়াজিব না সুন্নত?

ওয়াহিদুজ্জামান সাহেব বুখারীর ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বুখারী ১ম খন্ডের ১৩৪ পৃষ্ঠার হাদীসের ব্যাপারে লিখেন যে, এ হাদীস দ্বারা কুরবানী ওয়াজিব প্রমাণিত হয়। হানাফীদের মত এটাই। {তাইসীরুল বারী-২/৭০}

এখানে তিনি স্বীকার করলেন যে, বুখারীর হাদীস হিসেবে কুরবানী করা ওয়াজিব। কিন্তু তার আরেক কিতাবে লিখেছেনঃ “কুরবানী করা সুন্নত”। {কানযুল হাকায়েক-১৯৩}
বুখারীর সহীহ হাদীস রেখে কার তাকলীদে এ মত পোষণ করেন কথিত আহলে হাদীসরা?

ইমাম বসে নামায পড়ালে মুক্তাদীও কি বসে নামায পড়বে?

বুখারীর ১ম খন্ডের ৯৬ পৃষ্ঠার হাদীসে এসেছে যে, রাসূল সাঃ মৃত্যুর আগে অসুস্থ থাকার সময় বসে বসে নামায পড়িয়েছেন। কিন্তু সাহাবাগণকে বসার হুকুম দেন নি। ওয়াহিদুজ্জামান সাহেবও লিখেছেন যে, “রাসূল সাঃ বসে বসে নামায পড়ান। আর সাহাবাগণ রাসূল সাঃ এর পিছনে দাঁড়িয়েছিলেন। {রফউল আজাজাহ আন সুনানি ইবনে মাজাহ-১/৪৩০}

কিন্তু এ স্বীকারোক্তির পরও তিনি তার আরেক গ্রন্থে লিখেন যে, “আহলে হাদীসদের মাযহাব এটাই যে, যখন ইমাম বসে নামায পড়বে, তখন মুক্তাদীরা বসে বসে নামায পড়বে। {তাইসীরুল বারী-১/৪৩৯}

হায়েজ অবস্থায় তালাক দিলে পতিত হয় কি?

মুসলিম শরীফের ১ম খন্ডের ৪৭৬ নং পৃষ্ঠায় এসেছে যে, হযরত ইবনে ওমর রাঃ হায়েজ অবস্থায় স্বীয় স্ত্রীকে তালাক দিলেন। তখন রাসূল সাঃ তাকে স্ত্রীকে রাজআত করার আদেশ দিলেন।

গায়রে মুকাল্লিদ ওয়াহিদুজ্জামান সাহেব এ হাদীসের অধীনে লিখেন যে, রাসূল সাঃ যেহেতু রাজআত করার হুকুম দিয়েছেন। এর দ্বারা বুঝা যায় যে, হায়েজ অবস্থায় তালাক দেয়ায় তালাক পতিত হয়েছিল। {শরহে মুসলিম-৪/৮৯}

কিন্তু এ সহীহ হাদীস ছেড়ে দিয়ে তিনি ইবনে তাইমিয়া রহঃ এর অন্ধ তাকলীদ করে লিখেছেনঃ হায়েজ অবস্থায় তালাক দিলে তালাক হয় না। {তাইসীরুল বারী-৭/১৬৪, ২৩৫}

কুকুর ও তার ঝুটা পাক না নাপাক?

মুসলিম শরীফের ১ম খন্ডের ১৩৭ পৃষ্ঠার হাদীস দ্বারা বুঝা যায় যে, কুকুর নাপাক এবং তার উচ্ছিষ্ট নাপাক।

গায়রে মুকাল্লিদ ওয়াহিদুজ্জামান সাহেব এসব হাদীসের অধীনে লিখেনঃ “এসব হাদীস দ্বারা বুঝা যায় যে, কুকুর নাপাক, এবং তার লালা ও ঘাম নাপাকা। {শরহে মুসলিম-১/৪০৬}

কিন্তু এসব হাদীসের উল্টো নিজের আরেক কিতাবে পূর্বসূরীদের তাকলীদ করে লিখে দিলেনঃ “অধিক সহীহ কথা এটাই যে, কুকুর ও শুকরের উচ্ছিষ্ট পাক। {নুজুলুল আবরার-১/৩১}

ওয়াহিদুজ্জামান সাহেব নিজেই হাদীসের ব্যাখ্যা ও অনুবাদ করতে গিয়ে হাদীসের একটি অর্থ করলেন। তারপর হাদীসের সে অর্থ রেখে নিজের আহলে হাদীস ইমামদের তাকলীদ করে হাদীসের উল্টো আরেক মত পোষণ করেছেন। তাহলে হাদীসের বিরোধিতা করে কি তারা আহলে হাদীস থাকে? যারা সারা দিন তাকলীদকে শিরক শিরক বলে চিল্লায় তাদের এ তাকলীদের হুকুম কি হবে?

(To be continued ) 

Comments

Popular posts from this blog

হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু'র প্রকৃত হত্যাকারী কে....?

ইসলামী গজল গাওয়া বা শোনা কি জায়েজ?

নামধারী আহলে হাদিস বিদাতী ফিরকার ইসলাম বিরোধী ৫০টি ভ্রান্ত মতবাদ